ভ্রমণ ডায়েরী

Home News Contact About

গুয়াংজুতে প্রথমদিন ২য় পর্ব

ঢাকা থেকে কুনমিং হয়ে গুয়াংজু যেতে যে টাকা খরচ হচ্ছে , তার থেকে কম খরচে কুয়ালালামপুর হয়ে যেতে পারবো প্লাস কুয়ালালামপুর শহর টাও আবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘুরতে পারবো। এই লোভে বিমানের ঢাকা কুল ঢাকা টিকেট নিলাম। আর ২৪ ঘন্টা পর এয়ার এশিয়ার কুল গুয়াংজু এর টিকেট নিলাম। (রিটার্ন ১৫ দিন পর )

KLIA এ ভোরবেলা নেমে ওখান থেকে বাসে KLIA 2 তে চলে গেলাম। এটা ফ্রি ছিল। KLIA 2 তে লেফট লাগেজ রুমে স‌্যুটকেস রেখে বাসে করে Puduraya Bus Terminal চলে আসলাম। সারাদিন কুয়ালালামপুর এর বিভিন্ন জায়গা ঘোরাঘুরি করে KL Sentral থেকে রাত ৮ টার বাসে করে KLIA 2 ,চলে আসলাম। আমার ফ্লাইট ছিল ভোর ৫.০০ এ ।

Lanavola

সময় মত গোয়াংজু এয়ারপোর্ট এ নামি । ইমিগ্রেশন ফরমালিটি শেষ করে বাইরে এসে শাটল বাস এর টিকেট নিলাম। এই বাস যাবে গোয়াংজু রেল স্টেশন পর্যন্ত। এই স্টেশন এর কাছেই আছে বাস টার্মিনাল । ওখান থেকে বাসে করে যাবো গোয়াংজু সাউথ রেল স্টেশন। এমনই আমার প্ল‌্যান। একটা কথা বলে নেই এই ফাকে। আমার আসল ডেস্টিনেশন ছিল Changsha. Gz থেকে বা KL থেকে এই ডেস্টিনেশন পর্যন্ত এয়ারে যেতে পারতাম। কিন্তু ভ্রমন আর এ‌্যাডভেন্চার এর একটা শখ সব সময়েই আছে বলেই একটু ভিন্ন রুটে চলার প্ল‌্যান করেছি। গোয়াংজু সাউথ রেল স্টেশন থেকে হাই স্পীড ট্রেনে করেই Changsha যাবো ঠিক করি। Guangzhou South Railway Station is Asia's largest railway station (by area), when it officially opened operations in early 2010 . এশিয়ার লার্জেস্ট এই স্টেশন টাও দেখা হবে প্লাস হাই স্পীড ট্রেনেও চড়া হবে। এমন শখ মেটানোর জন‌্যই এত কিছু করা।

যাই হউক প্ল‌্যান মত এয়ারপোর্ট থেকে শাটল বাসে করে গুয়াংজো স্টেশনে নামলাম । নেট ঘেটে জেনেছি যে এটার সামনেই বাস টার্মিনাল। ওখান থেকে কয়েক ঘন্টা পরপর একটা বাস আছে যেটা গুয়াংজু সাউথ স্টেশনে নিয়ে যাবে।

Lanavola

গুয়াংজু রেল স্টেশনের সামনেই পার্কিং লটে দেখলাম দেখলাম অনেক বাস দাড়িয়ে আছে। কয়েকজন বাস ড্রাইভার কে জিগায় যে ওটা গুয়াংজু সাউথ স্টেশনে যাবে কিনা। ওরা কিছু বুুঝে না তাই কিছুই বলতে পারেনা। বিপদেই পড়লাম আমি। আর পথের হদিস না পেলে তো বিপদই আমার । চোখে অন্ধকার দেখা শুরু করলাম। পাশেই একটা দোকান থেকে সিম কিনলাম। চালু ও করলাম । ফোন দিলাম আমার চাইনিজ ফ্রেন্ড যাদের কোম্পানীতে আমি যাবো। রিং হল , কিন্তু সাড়া পেলাম না। যে দোকান থেকে সিম কিনেছিলাম তার ছেলেটিকে প্রশ্ন করলাম যে কাছে কোন বাস টার্মিনাল আছে কিনা। সে তেমন ইংরেজি বলতে পারেনা। আমাকে পাশে আরেক টা দোকানে পাঠালো, বললো ওই দোকানের মেয়েটা তার চেয়ে বেটার ইংরেজি জানে, সে হয়ত আমাকে হেল্প করতে পারবে। ঐ মেয়েটির কাছে গেলাম। প্রশ্ন করাতে সে বলল যে একটু সামনে আগিয়ে রাস্তার অপজিটে আছে বাস টার্মিনাল। লোকেশন আরো ডিটেইলস জানাতে সে আমাকে একটা কুলি কে দেখিয়ে দিয়ে বলল যে ওকে ২০/- টাকা দাও, ও তোমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে।

আমি ওকে বললাম যে তার দরকার নাই, বেটার তুমিই আমাকে ভাল মত বুঝিয়ে দাও, আমি একাই চলে যেতে পারব। মেয়েটি আর কথা বলতে রাজী হলনা। দোকানদারী নিয়েই ব‌্যস্ত রইলো। আমিও রাগ করে সামনের দিকে হাটা দিলাম।

Lanavola

বেশ কিছুদূর হাটলাম। কিন্তু কোন বাস টার্মিনাল চোখে পড়লো না। মেজাজ টা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আমি খুজছি আমাদের গাবতলী, সায়দাবাদ এর মত টার্মিনাল। পরে একজন কে জিগাইলাম, আমাকে রাস্তার অপর পাড়ে একটা ২-৩ তলা বিল্ডিং দেখিয়ে দিল। ফুট ওভার ব্রিজ দিয়ে পার হয়ে ওপাড়ে ডাইরেক্ট ঐ বিল্ডিং এ ঢুকলাম। দেখি অনেক কাউন্টার আর বোর্ড। সাউথ স্টেশন যাওয়ার কোন বাস এর হদিস পেলাম না বোর্ডে। দোতলা থেকে নীচে নেমে এলাম। দেখি একটা কাউন্টারে বেশ লম্বা কিউ। সবাই ওখান থেকেই টিকেট কাটছে। আমিও লাইনে দাড়িয়ে গেলাম। আমার সুযোগ যখন আসলো তখন কাউন্টারে বললাম যে সাউদার্ন রেল স্টেশন যাবো। ( সাউথ স্টেশন এর বদলে সাউদার্ন বলেছি) বেটা কি বুঝলো কে জানে, কম্পিউটারে টিপ দিয়ে আমাকে একটা টিকেট ধরিয়ে দিল। ১০০ এর একটা নোট দিয়েছিলাম ১২-১৫ টাকা ফেরত দিল। মন টা খুত খুত করতে লাগলো তখন। কারন এই সাউথ স্টেশন টা এখান থেকে প্রায় ১৭ কিমি দূরে আর ভাড়া এত হতে পারেই না।

চলবে.........

প্রথম পর্বের লিংক এখানে